সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই খবর মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে সাধারন জনতাকে ওই বৃদ্ধের সন্তানদের উদ্দেশ্যে ধিক্কার দিয়ে মন্তব্য করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে এই ঘটনায় বেশিমাত্রায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন তারই গর্ভে ধারণ করা তিন পুলিশ ছেলে ও স্কুল শিক্ষিকা মেয়ে।
পত্রপত্রিকার কল্যাণে বিষয়টিতেআলোড়ন সৃষ্টি হওয়ায় ওই মায়ের সন্তান এখন কর্মস্থলে নানা প্রশ্নে সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারণ, ইতোমধ্যে পুলিশ তিন ছেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
এই পুলিশ কর্মকর্তা মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধকে দেখতে যান এবং বৃদ্ধ মায়ের দায়িত্ব নেয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেছেন।
এছাড়া বৃদ্ধ মাকে অবহেলার কারণে আরেক সন্তান মেয়ে বাবুগঞ্জের পূর্ব ভুতেরদীয় নবারুন সরকাররি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম সুলতানাকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসার কেএম তোফাজ্জল হোসেন সোমবার তাকে এই বিষয়ে শোকজ করেছেন।
এ অবস্থায় স্কুল শিক্ষিকা বলেন, স্কুলের বেতন ব্যতীত তার আর কোন ইনকাম নেই। ফলে স্বামীর সংসারে বসে তিনি বৃদ্ধ মায়ের তেমন একটা খরচ বহন করতে পারছেন না।
যদিও এই শিক্ষিকা এর আগে গত শনিবার তার মাকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন- নিজের সংসার পরিচালনা করে আর সময় হয় না। যে কারণে বৃদ্ধ মায়ের খোঁজখবর নিতে পারেননি।
একজন মানুষ গড়ার কারিগরের মুখে এমন কথা শুনে খোদ পুলিশ প্রশাসনকেও হতবাক করেছিলো। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে খবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে ওই শিক্ষিকার বেতন ২০ হাজারের ওপরে।
ফলে এই বিষয়টি স্থানীয় সংসদ অ্যাডভোকেট শেখ মো. টিপু সুলতানকে খুব বেশি মর্মাহত করেছে। যে কারণে তিনি পুলিশের সহযোগিতায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। এমনকি তিনি নিজেই সার্বিক দায়ভার নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এছাড়াও অনেকে রাজনীতিবীদ, সমাজসেবক ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই বৃদ্ধ নারীর দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বাবুগঞ্জে কর্মরত ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী সরদারের স্ত্রী।
আইয়ুব আলী কৃষক পরিবারের সন্তান হলেও নানা অভাব অনাটনের সংসারে ছয় সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই দিন কেটেছে তাদের।
আইয়ুব আলী-মনোয়ারা দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে তিন ছেলে- ফারুক হোসেন, নেছার এবং জসীম উদ্দিন পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। মেয়ে মরিয়ম সুলতানা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত। অন্য দুই সন্তান শাহাবউদ্দিন ব্যবসা এবং গিয়াস উদ্দিন নিজের ব্যবহৃত ইজিবাইক ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
No comments:
Post a Comment