মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের সর্বত্র সস্তায় নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ইন্টারনেটের দাম কমানোকে নিজের নৈতিক দায়িত্ব বলেছেন তিনি। ইন্টারনেট বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সীমিত মুনাফা করে ‘গলাকাটা মুনাফা’ করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসারও আহ্বান তার।
সরকারের চার বছরপূর্তিতে ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এগিয়ে যাওয়ার আরও চার বছর’ নামের বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের আগে থেকে সরকারের কাছে বারবার গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সুলভ করার জোর দাবি জানিয়ে আসা ব্যক্তি তিনি। এখন নিজের হাতেই পেয়েছেন গুরুদায়িত্ব। এই দায়িত্ব নিয়ে ইন্টারনেটের দাম কমানোকে ‘নৈতিক দায়িত্ব’ জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন: ডিজিটাল বাংলাদেশ সরকারের নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়, মোস্তাফা জব্বার-জুনাইদ আহমেদ পলকের না, এই বাংলাদেশ নতুন প্রজন্মের। কারণ প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় মেয়াদে ডিজিটাল বাংলাদেশ নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসর্গ করেন।
এই নতুন প্রজন্মের ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ইন্টারনেট হচ্ছে মহাসড়ক। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করছেন। কিন্তু জ্ঞান ভিত্তিক সমাজের জন্য আমরাও মহাসড়ক গড়তে চাই, এটা ইন্টারনেট মহাসড়ক, এটা ইট-কংক্রিটের নয়। এই মহাসড়ক গড়া আমার মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই ‘ইন্টারনেট মহাসড়কের’ জন্য তিনটি বিষয় জরুরি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন: প্রথম বিষয়টি হলো ইন্টারনেটের গতি। ইন্টারনেটের গতি প্রয়োজন অনুযায়ী হতে হবে। আমরা এই গতি আনতে ফোরজি যুগে পা রাখতে যাচ্ছি। ফোরজি কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং থাকবে। তবে আমি বিশ্বাস করি কেবল মোবাইল ইন্টারনেট দিয়ে জনগণের ইন্টারনেট চাহিদা পূরণ করা যাবে না। এজন্য দরকার ব্রডব্যান্ড। বাড়ি বাড়ি ইন্টারনেট পৌঁছানোর পরিকল্পনা চলছে।
গলাকাটা মুনাফা নয়
আমাকে ধারণা দেয়া হয়েছিল সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি থেকে কোম্পানিগুলো প্রতি এমবিপিএস ৬২৫ টাকায় কিনে থাকে। আমি সাবমেরিন ক্যাবলের কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে জানলাম চট্টগ্রাম থেকে ২০৪ টাকায় ব্যান্ডউইথ কিনছে কোম্পানিগুলো। ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কম দামে ব্যান্ডউইথ নিয়ে গ্রাহকদের কাছে বেশি দামে ডাটা বিক্রি করছে।
এমন অনৈতিকতার সমালোচনা করে তিনি বলেন: ব্যবসা মুনাফা করার জন্যই। যে দামে ব্যান্ডউইথ কিনছেন সেটার সঙ্গে মুনাফা, খরচ যোগ করেই দাম রাখুন। কিন্তু মুনাফা গলাকাটা হবে না।
শুক্রবার কর্মদিবস না হলেও কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়। কারণ সরকারের ৪ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে সকাল-সকাল নবনিযুক্ত মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী আসেন টাওয়ারের তৃতীয় তলার বিসিসি মিলনায়তনে।
এখানে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সরকারের বর্তমান মেয়াদে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে আইসিটি বিভাগের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরতে মঞ্চে আসেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ইন্টারনেটকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল চারটি স্তম্ভের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সবার জন্য সুলভমূল্যে দ্রুতগতির নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এজন্য গ্রাম পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশের সকল ইউনিয়নে হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ দেবে সরকার। ইনফো সরকার ৩ প্রকল্পের মাধ্যমে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনতে চায়। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
Source File : http://bdexpress.uodoo.com
No comments:
Post a Comment