Monday, 25 December 2017

ঘুষ খাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে তোলপাড়

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদে
আপনারা ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় মাত্রায় খান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এ বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশজুড়ে। তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি চলছে নানা ধরনের ব্যঙ্গ বিদ্রুপ। মন্ত্রীর এ বক্তব্যে ঘুষ দুর্নীতি আরো ছড়িয়ে পড়বে বলে উদ্বেগ আর হতাশা প্রকাশা করেছেন অনেকে। কেউ কেউ মন্ত্রীর বক্তব্যকে জাতির জন্য ভয়ঙ্কর বার্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জাতির মেরুদণ্ড নির্মাণের দায়িত্ব নিয়োজিত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্যকে গভীর দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রবীণ অনেক শিক্ষাবিদ।
ঘুষ খাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিতে থাকেন অনেকে। তাতে তারা ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করার পাশাপাশি ব্যঙ্গ বিদ্রুপসহকারে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন গতকাল দিনব্যাপী। অফিস, চায়ের আডডায়ও চলে এ নিয়ে তির্যক আলোচনা। তাদের মতে মন্ত্রীর এ বক্তব্যে ঘুষখোররা যেমন উৎসাহিত হবে- তেমনি বাড়বে এর মাত্রা। শিক্ষামন্ত্রী ঘুষকে বৈধতা দিলেন মন্তব্য করে অনেকে ফেসবুকে লিখেছেন ঘুষের সহনীয় মাত্রা কতটুকু তা বললে ভালো হতো। অনেকে লিখেছেন এখন আর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের প্রয়োজন নেই। মন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর দুদক বিলুপ্ত করা উচিত। আরেকজন প্রশ্ন করেছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন আগের চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে। তার পরও সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে এভাবে সরকারি লোকজনকে ঘুষ খাওয়াকে বৈধতা দান এবং উৎসাহ দেয়া হয় তাহলে আমরা আর কষ্ট করে ট্যাক্স দেবো কেন। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তাদের উচ্চ বেতন দেয়ার পরও যদি তাদের ঘুষ খাওয়া অব্যাহত থাকে তাহলে তাদের বেতন বাড়ানো হলো কেন। এমনকি বেতন বাড়ানোর পর ঘুষ কি পরিমাণ কমেছে সে প্রশ্নও উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এমিরিটাস প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর এ বক্তব্য অপ্রত্যাশিত, দুঃখজনক। এতে দুর্নীতিবাজরা আরো উৎসাহিত হবে। মন্ত্রীর দায়িত্ব অনিয়ম প্রতিকার করা। কিন্তু তিনি তার এ বক্তব্যের মাধ্যমে দুর্নীতি মেনে নিলেন। এমনিতেই শিক্ষা খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা অভিযোগ রয়েছে, তারপর মন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আসা উচিত নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর এ বক্তব্য কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করা যায় না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যের মাধ্যমে জাতির কাছে এক ভয়ঙ্কর বার্তা পাঠিয়েছেন। জাতির মেরুদণ্ড গঠনের দায়িত্বে বসে তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারে না।
কয়েক বছর ধরে ক্রমাগতভাবে প্রশ্নফাঁসসহ নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত দেশের শিক্ষা খাত। শিক্ষার মানের ধস বারবার জাতীয় আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি পরীক্ষা থেকে শুরু করে প্রায় সব পাবলিক পরীক্ষায় ছড়িয়ে পড়েছে অরাজকতা। প্রশ্নফাঁস এতই মহামারী আকার ধারণ করেছে যে, প্রাথমিক ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায়ও প্রশ্নফাঁসের কারণে শত শত স্কুলে পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়া এবং ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার প্রশ্নের হুবহু মিল থাকার পরও শুরুতে প্রশ্নফাঁস অস্বীকার করেছেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি।
পরে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা স্বীকার করার পর সর্বশেষ শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ শিক্ষকদেরই আসল প্রশ্নফাঁসকারী হিসেবে বক্তব্য দেন। এ নিয়ে শিক্ষকদের পক্ষে শুরু হয় উত্তপ্ত সমালোচনা। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বারবার জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের গণহারে অকৃতকার্য হওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনায় সমালোচনা চলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার মান নিয়ে। পাঠ্যবই পরিবর্তন নিয়েও কয়েক বছর ধরে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে বিভিন্ন মহলে। সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি পরীক্ষা ঘিরে শিক্ষার্থী, অভিভাবকেরা বন্দী হয়ে পড়েছেন কোচিং প্রাইভেট ব্যবস্থার কাছে। কোচিং প্রাইভেট নির্ভরতা কমার আশা নিয়ে চালু করা হয়েছিল সৃজনশীল ব্যবস্থা। কিন্তু আজ অবধি বেশির ভাগ শিক্ষকই এটি রপ্ত করতে পারেননি। ঘন ঘন পাবলিক পরীক্ষা, সৃজনশীল, প্রশ্নফাঁসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সব মহলে দীর্ঘ দিন ধরে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা। এসব কারণে বারবার সমালোচিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
গত রোববার শিক্ষাভবনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) সম্মেলন কক্ষে অধিদফতেরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ল্যাপটপ ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খান, কিন্তু সহনীয় হয়ে খান। কেননা, আমার এটা বলার সাহসই নেই যে, ঘুষ খাবেন না। তা অর্থহীন হবে।’
প্রায় সবখানেই ঘুষ লেনদেন হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘খালি যে অফিসাররা চোর, তা না। মন্ত্রীরাও চোর। আমিও চোর। এ জগতে এমনই চলে আসছে। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’

২০১৮ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সময় সূচি


বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ২০১৮ সালের সূচী.. 
১- ১৫ জানুয়ারি থেকে ত্রিদেশীয় সিরিজ।  প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে আর শ্রীলংকা।  

২- জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি,শ্রীলংকার সাথে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ।  সিরিজ হবে দুইটি টেস্ট এবং দুইটি টি-টুয়েন্টির।  কোনো ওয়ানডে ম্যাচ নেই।  

৩- মার্চ ২০১৮, শ্রীলংকার ৭০ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে 'নিদাহাস কাপ' হবে বাংলাদেশ,শ্রীলংকা এবং ভারতের মধ্যে।  এটা টি-টুয়েন্টি কাপ।  

৪- জুলাই ২০১৮.. ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে বাংলাদেশ। সিরিজে আছে,দুইটি টেস্ট,তিনটি ওডিয়াই এবং একটি টি টুয়েন্টি।  
৫- আগস্ট ১৮, বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে কঠিন সিরিজ।  অস্ট্রেলিয়ার সাথে এই সিরিজ।  দুইটি টেস্ট এবং তিনটি ওয়ানডে থাকবে।  

৭- সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হবে ভারতে।  সেপ্টেম্বরের ১৫-৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে এশিয়া কাপ।  এবার সবার সাথে কোয়ালিফাই করবে আফগানিস্তান।  অন্য দলকে কোয়ালিফাইয়ার খেলে আসতে হবে।  হয়তো পাকিস্তান এশিয়া কাপ বর্জন করবে।  

৮- অক্টোবর-নভেম্বর ১৮- ফিরতি সিরিজে বাংলাদেশ আসবে উইন্ডিজ বাহিনী।  দুইটি টেস্ট,তিনটি ওয়ানডে এবং একটি টি টুয়েন্টি থাকবে।  

৯- নভেম্বর-ডিসেম্বর বিপিএলের ষষ্ঠ আসর।  

বিঃদ্রঃ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ নেই এফটিপির সূচী অনুযায়ী।  হয়তো সেসময় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতেও পারে বাংলাদেশ দল।   

Friday, 22 December 2017

জাতিসংঘে প্রস্তাব পাসে খুশিতে মাতোয়ারা মুসলিম বিশ্ব

জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মুসলিম বিশ্ব খুশিতে মাতোয়ারা। ফিলিস্তিনিদের পক্ষাবলম্বনকারী দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। রাশিয়া বলেছে, এটা আমেরিকার জন্য বড় পরাজয়। তবে ক্ষোভে উন্মত্ত মার্কিন প্রশাসন এখন কী পদক্ষেপ নেয় তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
 
বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্পের প্রস্তাব বাতিল চেয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে ১২৮টি দেশ ভোট দেয়। বিপক্ষে ভোট দেয় মাত্র ৯টি দেশ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ছাড়া বাকি দেশগুলো কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশ। ভোটদান থেকে বিরত ছিল ৩৫ দেশ। এ প্রস্তাবের আইনি মূল্য কম হলেও প্রতীকী মূল্য ব্যাপক বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
 
ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ওআইসির চেয়ারম্যান এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। টুইটারে তিনি বলেছেন, ‘আমরা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিপুল সমর্থনকে ভীষণ আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, ট্রাম্প প্রশাসন ওই দুর্ভাগ্যজনক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করবে। এটা স্পষ্ট যে, এর কোনো বৈধতা নেই।’ ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, আমেরিকার মধ্যস্থতা তার দেশ আর মানবে না।
 
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বেশিরভাগ দেশ। সাহায্য বন্ধে মার্কিন হুমকির তোয়াক্কা না করে এসব দেশ ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন কী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সেটা নিয়ে চলছে আলোচনা। ট্রাম্পপন্থী বহু রাজনীতিবিদ ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সহযোগিতা গ্রহণকারী দেশগুলো শাসানো উচিত। তাদের বলা উচিত, এমনটা যেন আর না হয়। কেউ কেউ বলছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা যেন বিপক্ষে ভোট দেয়া দেশের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ করে দেন। তবে কঠিন পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে সংশয়ও রয়েছে তাদের মনে।
 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি দু’জনই আর্থিক সহায়তা বন্ধের হুমকি দিয়েছিলেন। সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দিয়ে ভোটের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তাদের আমরা কোটি কোটি ডলার সহায়তা করি। আর তারা আমাদেরই বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চায়। ভোট দিক তারা, আমাদের অনেক টাকা বাঁচবে।’
 
ভোটের আগ মুহূর্তে দেয়া ভাষণে নিকি হ্যালি বলেন, জাতিসংঘ ও এর বিভিন্ন সংস্থায় সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয় আমেরিকা। ফলে এ সংস্থায় তাদের চাহিদা বা প্রত্যাশাও বেশি থাকবে। অথচ তার বদলে এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে অপমানজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। নিকি হ্যালি বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি চাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি আমাদের বিনিয়োগ ব্যর্থ হয় তাহলে আরও লাভজনক খাতে আমাদের বিনিয়োগ কাজে লাগানোর বাধ্যকতা আছে। যারা এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেবে তাদের বিষয়টি মনে রাখা উচিত।’ সাধারণ পরিষদের জরুরি বৈঠকে নিকি হ্যালি অঙ্গীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমেই দূতাবাস নিয়ে যাবে। এটাই চায় আমেরিকার মানুষ এবং এটা করা সঠিক। মার্কিন দূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে শান্তি প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্র আজকের এ দিনটি মনে রাখবে। যেদিন জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণের শিকার হয়েছে। আমরা তখনও এ দিনটি মনে রাখব যখন অনেকে আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইতে আসবে, যা তারা প্রায় সময়েই করে থাকে।
 
হ্যালি ঘোষণা দিয়েছিলেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দেবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যুক্তরাষ্ট্র কেমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এক মার্কিন সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ভোটের জন্য দেশগুলোকে ছাড় দেয়া হবে না। বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এর প্রভাব পড়তে পারে। তবে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হেদার নরেট বলেছেন, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
 
মার্কিন রাজনীতিবিদরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মিসর ও জর্ডানের মতো মিত্ররাও যেখানে রয়েছে সেখানে কিভাবে এ পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। রিগান ও বুশ প্রশাসনে শীর্ষ কমকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালন করা এলিয়ট আব্রাম বলেন, ওই দেশগুলোতে আর্থিক সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রেরই জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখে।
 
ট্রাম্পের পক্ষে যে কারণে ভোট : জেরুজালেমকে ইসরাইলি দখলদারিত্বের পক্ষে ভোট দেয় ৯টি দেশ। এ ৯ দেশের দুটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। অর্থাৎ মাত্র সাতটি দেশ এ ইস্যুতে ট্রাম্পের পাশে ছিল। ওই সাতটি দেশের মধ্যে চারটিই আবার ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র। চার দেশের তিনটিই এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশ ছিল। এখনও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে তারা কার্যত মার্কিন শাসনাধীন। দেশ তিনটি হচ্ছে- মাইক্রোনেশিয়া, পালাউ এবং দ্য মার্শাল আইল্যান্ডস। এর মধ্যে ১০ হাজারের কম জনসংখ্যার দেশও আছ। কোনোটির মানুষ আবার চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতেও চাকরি করতে পারেন। ফলে পররাষ্ট্র নীতিতে মার্কিন সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ তাদের নেই বললেই চলে। বাকি দেশগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতেও যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া হুমকির প্রভাব ছিল।
 
ট্রাম্পের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়া এবং ভোটদান থেকে বিরত থাকা দেশগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ভীতি নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। ফলে এ দেশগুলোর নাম-পরিচয়ের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে জেরুজালেম প্রশ্নে মার্কিন পদক্ষেপকে সমর্থন জানায় গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, পালাই, দ্য মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, টোগো, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে বাদ দিলে বাকি সাতটি দেশের মধ্যে চারটি দেশই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র।
 
মার্শাল আইল্যান্ডস প্রশান্ত মহাসাগরের কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ জারি হয়। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এ দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে ৫৩ হাজার মানুষের বসবাস। ১৯৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাধীনতা পায় মার্শাল আইল্যান্ডস। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির করা এক চুক্তিতে ওয়াশিংটনকে মার্শাল আইল্যান্ডসের পররাষ্ট্র নীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা দেয়া আছে। পালাউ রাষ্ট্রটিও প্রশান্ত মহাসাগরের একগুচ্ছ দ্বীপ নিয়ে গঠিত যা যুক্তরাষ্ট্রের শাসনাধীন ছিল। ১৯৯৪ সালে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করে। তবে এক চুক্তির আওতায় ৫০ বছর ধরে দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে আছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুকের তথ্য অনুযায়ী, পালাউয়ে ২১ হাজার ৪০০ মানুষের বসবাস। আরেক দ্বীপ রাষ্ট্র মাইক্রোনেশিয়ায় ১ লাখ ৪ হাজার মানুষ বাস করেন। ১৯৮৬ সাল নাউরু যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে না থাকলেও ২১ বর্গ কিলোমিটারের এ দেশটিতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ১০ হাজারেরও কম।
 
কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকোসহ যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশগুলো ভোটদান থেকে বিরত ছিল। আর্জেন্টিনা ও মেক্সিকো এর আগে ফিলিস্তিনের সমর্থনে থাকলেও বৃহস্পতিবার ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এমনকি গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাসের অবস্থানও একই রকম ছিল। কেনিয়ার মতো উগান্ডা ও দক্ষিণ সুদানের মতো আফ্রিকান দেশগুলোও ভোটদান থেকে বিরত ছিল। মিয়ানমার ও ফিলিপাইনও বিরত ছিল ভোটদান থেকে। ২০১২ সালে তারা ফিলিস্তিনের পক্ষেই ছিল। তবে এশিয়ায় ভারত ও চীন ইসরাইলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশে প্রভাব বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে।
 
আমেরিকার জন্য বড় পরাজয় -রাশিয়া : রাশিয়ার পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি আলেক্সি পুশকোভ বলেছেন, মার্কিন হুমকি সত্ত্বেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জেরুজালেম ইস্যুতে প্রস্তাব পাস হয়েছে। এটা আমেরিকার জন্য বড় পরাজয়।
 
তিনি শুক্রবার তার টুইটার পেজে লিখেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বায়তুল মোকাদ্দাস ও নাৎসিবাদ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। দুটি প্রস্তাবেরই বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি সদস্য দেশের ভোটে দুটি প্রস্তাবই পাস হয়েছে। আমেরিকা যে বিশ্বে একঘরে হয়েছে এটি তার প্রমাণ। তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আমেরিকা পরাজিত হয়েছে।
 
আমেরিকাকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানব না -মাহমুদ আব্বাস : ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, তার দেশ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ায় আমেরিকার পক্ষ থেকে নেয়া কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করবে না। একই সঙ্গে তিনি ওয়াশিংটনকে একটি ‘অসৎ মধ্যস্থতাকারী’ পক্ষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
 
শুক্রবার প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠকের পর মাহমুদ আব্বাস বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ায় আমেরিকা নিজেকে ‘অসৎ মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে প্রমাণ করেছে এবং ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত কোনো পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করব না।”
 
প্রেসিডেন্ট ম্যাত্রেঁদ্ধা বলেন, মার্কিনিরা নিজেদের একঘরে করে ফেলছে। তবে এ একই কাজ আমি না করার চেষ্টা করছি।”
 
সত্য ও ন্যায়ের জয় হয়েছে -হামাস : জাতিসংঘের জরুরি বৈঠকে জেরুজালেম প্রশ্নে ভোটাভুটিতে সত্য, ন্যায় ও ইতিহাসের জয় হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাস। বৃহস্পতিবার ভোটের পর হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ এ মন্তব্য করেছেন। হামাস প্রধান জানান, জাতিসংঘের এ ভোটে জনগণের আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব ও রাজনৈতিক ভীতি প্রদর্শন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে হানিয়েহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনকে আন্তর্জাতিক ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেরুজালেমকে রাজধানীর স্বীকৃতি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

Source file : http://bdexpress.uodoo.com

Spiritual Music || Relaxation Music || মাজারের সামনের দৃশ্য - গান

Saturday, 9 December 2017

সোফিয়ার বাংলাদেশ সফরে কত লাখ টাকা খরচ হলো!



এবারের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের প্রধান আকর্ষণ ছিল সিঙ্গাপুরে তৈরি ও সৌদি আরবের নাগরিকত্ব পাওয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট সোফিয়া। মঙ্গলবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছায় সোফিয়া এবং এর নির্মাতা ডেভিড হ্যানসন।
এদিন বেলা আড়াইটায় ‘টেক টক উইথ সোফিয়া’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বুধবার ভোর রাতে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে সোফিয়া। ২৪ ঘণ্টারও কম সময় ঢাকায় অবস্থান করে এ রোবট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় শীর্ষে পৌঁছে যায়।
সবারই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল রোবট সোফিয়ার নানা দিক। তবে সোফিয়াকে বাংলাদেশে আনতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে শুরু হয় নানা বিভ্রান্তি। ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা খরচ করে সোফিয়াকে আনা হয়েছে দাবি করে অনেকে ফেসবুকে সমালোচনাও করেন।
এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা বিষয়টি নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানারকম প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। সেসব গুজবে কান না দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের গড়ার পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সোফিয়াকে বাংলাদেশের আনার পুরো খরচ বহন করেছে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ।’
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্ত খান বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক সব সময় বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এরই অংশ হিসেবে রোবট সোফিয়াকে বাংলাদেশে প্রদর্শনের জন্য স্পন্সর করেছে ইসলামী ব্যাংক। এ রোবটকে দেখতে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এসেছিল। তারা উৎসাহ পেয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ও বিজ্ঞান বিষয়ে অনেক ধারণা নিয়েছে এটাই আমাদের স্বার্থকতা।’
রোবট সোফিয়াকে বাংলাদেশে আনতে কত টাকা খরচ হয়েছে জানতে চাইলে আরাস্ত খান বলেন, ‘আপনি কত ধারণা করছেন? খুবই অল্প খরচে এটি আনা হয়েছে। যা আপনাদের ধারণায় নেই।’
সুনির্দিষ্ট কোনো অর্থের পরিমাণ না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোবট সোফিয়ার পেছনে এক কোটিরও কম টাকা খরচ হয়েছে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ‘রোবট সোফিয়াকে বাংলাদেশে আনার পেছনে প্রায় ৯০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।’ সূত্র- জাগো নিউজ

অর্ধ পৃথিবীর শাসক ওমর (রা) যে চিঠি পাঠ করে এত কেঁদেছেন যে, তাঁর চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজে গেল


চিঠি পাঠ করে হযরত উমর রা. এত কেঁদেছেন যে তাঁর চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজে গেল।
হযরত উমর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথম দিকে হযরত আবু উবাইদা বায়তুল মাল দেখাশুনা করতেন। ঈদের আগের দিন খলীফার স্ত্রী বললেন, ‘আমাদের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না হলেও চলবে, কিন্তু ছোট বাচ্চাটি ঈদের নতুন কাপড়ের জন্য কাঁদছে’।
খলীফা বললেন, ‘আমার নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই’। খলীফা পত্নী উম্মে কুলসুম খলীফার আগামী মাসের বেতন থেকে অগ্রিম নেয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করলেন।
খলীফা উমর (রাঃ) হযরত আবু উবাইদাকে খলীফার এক মাসের অগ্রিম বেতন দেয়ার জন্য চিঠি পাঠালেন।
সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা যিনি, যিনি অর্ধ পৃথিবী শাসন করছেন, তাঁর এ ধরণের চিঠি পাঠ করে হযরত আবু উবাইদার চোখে পানি এসে গেল। উম্মতে আমীন হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) বাহককে টাকা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চেয়ে চিঠি লিখলেন, ‘আমীরুল মুমিনীন! অগ্রিম বেতন বরাদ্দের জন্য দুটি বিষয়ে আপনাকে ফয়সালা দিতে হবে। প্রথমত আগামী মাস পর্যন্ত আপনি বেঁচে থাকবেন কি না?
দ্বিতীয়ত, বেঁচে থাকলেও মুসলমানেরা আপনাকে খিলাফতের দায়িত্বে বহাল রাখবে কিনা?’
চিঠি পাঠ করে হযরত উমর এত কেঁদেছেন যে তাঁর চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজে গেলো। আর হাত তুলে হযরত আবু উবাইদার জন্য দোয়া করলেন, ‘আল্লাহ আবু উবাইদার উপর রহম কর, তাঁকে হায়াত দাও’।
স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘প্রত্যেক জাতির একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি আছেন, আমার উম্মতের বিশ্বস্ত ব্যক্তি হচ্ছেন আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ’।

Monday, 4 December 2017

ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো


স্টিভ জবস বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ও অ্যানিমেশন স্টুডিও পিক্সারের (টয় স্টোরি, ফাইন্ডিং নিমো, মনস্টার ইনকরপোরেটেড, ওয়াল-ই, আপ-এর মতো অসাধারণ অ্যানিমেশন তৈরি করেছেন) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ২০০৫ সালে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন স্টিভ জবস। সে বছর ১২ জুন এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর সেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যে ভাষণটি তিনি দিয়েছিলেন, সেটি সত্যিই অসাধারণ। 

প্রথমেই একটা সত্য কথা বলে নিই। আমি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয় পাস করিনি। তাই সমাবর্তন জিনিসটাতেও আমার কখনো কোনো দিন উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। এর চেয়ে বড় সত্য কথা হলো, আজকেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান সবচেয়ে কাছে থেকে দেখছি আমি। তাই বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। কোনো কথার ফুলঝুরি নয় আজ, স্রেফ তিনটা গল্প বলব আমি তোমাদের। এর বাইরে কিছু নয়।
আমার প্রথম গল্পটি কিছু বিচ্ছিন্ন বিন্দুকে এক সুতায় বেঁধে ফেলার গল্প।
ভর্তি হওয়ার ছয় মাসের মাথাতেই রিড কলেজে পড়ালেখায় ক্ষ্যান্ত দিই আমি। যদিও এর পরও সেখানে আমি প্রায় দেড় বছর ছিলাম, কিন্তু সেটাকে পড়ালেখা নিয়ে থাকা বলে না। আচ্ছা, কেন আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লাম?
এর শুরু আসলে আমার জন্মেরও আগে। আমার আসল মা ছিলেন একজন অবিবাহিত তরুণী। তিনি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। আমার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আমাকে এমন কারও কাছে দত্তক দেবেন, যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আছে। সিদ্ধান্ত হলো এক আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী আমাকে দত্তক নেবেন। কিন্তু একদম শেষ মুহূর্তে দেখা গেল, ওই দম্পতির কারোরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেই, বিশেষ করে আইনজীবী ভদ্রলোক কখনো হাইস্কুলের গণ্ডিই পেরোতে পারেননি। আমার মা তো আর কাগজপত্রে সই করতে রাজি হন না। অনেক ঘটনার পর ওই দম্পতি প্রতিজ্ঞা করলেন, তাঁরা আমাকে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন, তখন মায়ের মন একটু গলল। তিনি কাগজে সই করে আমাকে তাঁদের হাতে তুলে দিলেন।
এর ১৭ বছর পরের ঘটনা। তাঁরা আমাকে সত্যি সত্যিই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু আমি বোকার মতো বেছে নিয়েছিলাম এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়, যার পড়ালেখার খরচ প্রায় তোমাদের এই স্ট্যানফোর্ডের সমান। আমার দরিদ্র মা-বাবার সব জমানো টাকা আমার পড়ালেখার পেছনে চলে যাচ্ছিল। ছয় মাসের মাথাতেই আমি বুঝলাম, এর কোনো মানে হয় না। জীবনে কী করতে চাই, সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা এ ব্যাপারে কীভাবে সাহায্য করবে, সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। অথচ মা-বাবার সারা জীবনের জমানো সব টাকা এই অর্থহীন পড়ালেখার পেছনে আমি ব্যয় করছিলাম। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং মনে হলো যে এবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। সিদ্ধান্তটা ভয়াবহ মনে হলেও এখন আমি যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন মনে হয়, এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ডিগ্রির জন্য দরকারি কিন্তু আমার অপছন্দের কোর্সগুলো নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারলাম, কোনো বাধ্যবাধকতা থাকল না, আমি আমার আগ্রহের বিষয়গুলো খুঁজে নিতে লাগলাম।
পুরো ব্যাপারটিকে কোনোভাবেই রোমান্টিক বলা যাবে না। আমার কোনো রুম ছিল না, বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে ঘুমোতাম। ব্যবহূত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে আমি পাঁচ সেন্ট করে কামাই করতাম, যেটা দিয়ে খাবার কিনতাম। প্রতি রোববার রাতে আমি সাত মাইল হেঁটে হরেকৃষ্ণ মন্দিরে যেতাম শুধু একবেলা ভালো খাবার খাওয়ার জন্য। এটা আমার খুবই ভালো লাগত। এই ভালো লাগাটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
রিড কলেজে সম্ভবত দেশে সেরা ক্যালিগ্রাফি শেখানো হতো সে সময়। ক্যাম্পাসে সাঁটা পোস্টারসহ সবকিছুই করা হতো চমত্কার হাতের লেখা দিয়ে। আমি যেহেতু আর স্বাভাবিক পড়ালেখার মাঝে ছিলাম না, তাই যে কোনো কোর্সই চাইলে নিতে পারতাম। আমি ক্যালিগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হয়ে গেলাম। সেরিফ ও স্যান সেরিফের বিভিন্ন অক্ষরের মধ্যে স্পেস কমানো-বাড়ানো শিখলাম, ভালো টাইপোগ্রাফি কীভাবে করতে হয়, সেটা শিখলাম। ব্যাপারটা ছিল সত্যিই দারুণ সুন্দর, ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানের ধরাছোঁয়ার বাইরের একটা আর্ট। আমি এর মধ্যে মজা খুঁজে পেলাম।
এ ক্যালিগ্রাফি জিনিসটা কোনো দিন বাস্তবজীবনে আমার কাজে আসবে—এটা কখনো ভাবিনি। কিন্তু ১০ বছর পর আমরা যখন আমাদের প্রথম ম্যাকিন্টোস কম্পিউটার ডিজাইন করি, তখন এর পুরো ব্যাপারটাই আমার কাজে লাগল। ওটাই ছিল প্রথম কম্পিউটার, যেটায় চমত্কার টাইপোগ্রাফির ব্যবহার ছিল। আমি যদি সেই ক্যালিগ্রাফি কোর্সটা না নিতাম, তাহলে ম্যাক কম্পিউটারে কখনো নানা রকম অক্ষর (টাইপফেইস) এবং আনুপাতিক দূরত্বের অক্ষর থাকত না। আর যেহেতু উইন্ডোজ ম্যাকের এই ফন্ট সরাসরি নকল করেছে, তাই বলা যায়, কোনো কম্পিউটারেই এ ধরনের ফন্ট থাকত না। আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয় না ছাড়তাম, তাহলে আমি কখনোই ওই ক্যালিগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হতাম না এবং কম্পিউটারে হয়তো কখনো এত সুন্দর ফন্ট থাকত না। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে এক সুতায় বাঁধা অসম্ভব ছিল, কিন্তু ১০ বছর পর পেছনে তাকালে এটা ছিল খুবই পরিষ্কার একটা বিষয়।
আবার তুমি কখনোই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে এক সুতায় বাঁধতে পারবে না। এটা কেবল পেছনে তাকিয়েই সম্ভব। অতএব, তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে, বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো একসময় ভবিষ্যতে গিয়ে একটা অর্থবহ জিনিসে পরিণত হবেই। তোমার ভাগ্য, জীবন, কর্ম, কিছু না কিছু একটার ওপর তোমাকে বিশ্বাস রাখতেই হবে। এটা কখনোই আমাকে ব্যর্থ করেনি, বরং উল্টোটা করেছে।
আমার দ্বিতীয় গল্পটি ভালোবাসা আর হারানোর গল্প।
আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম। কারণ, জীবনের শুরুতেই আমি যা করতে ভালোবাসি, তা খুঁজে পেয়েছিলাম। আমার বয়স যখন ২০, তখন আমি আর ওজ দুজনে মিলে আমাদের বাড়ির গ্যারেজে অ্যাপল কোম্পানি শুরু করেছিলাম। আমরা পরিশ্রম করেছিলাম ফাটাফাটি, তাই তো দুজনের সেই কোম্পানি ১০ বছরের মাথায় চার হাজার কর্মচারীর দুই বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়। আমার বয়স যখন ৩০, তখন আমরা আমাদের সেরা কম্পিউটার ম্যাকিন্টোস বাজারে ছেড়েছি। এর ঠিক এক বছর পরের ঘটনা। আমি অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুত হই। যে কোম্পানির মালিক তুমি নিজে, সেই কোম্পানি থেকে কীভাবে তোমার চাকরি চলে যায়? মজার হলেও আমার ক্ষেত্রে সেটা ঘটেছিল। প্রতিষ্ঠান হিসেবে অ্যাপল যখন বড় হতে লাগল, তখন কোম্পানিটি ভালোভাবে চালানোর জন্য এমন একজনকে নিয়োগ দিলাম, যে আমার সঙ্গে কাজ করবে। এক বছর ঠিকঠাকমতো কাটলেও এর পর থেকে তার সঙ্গে আমার মতের অমিল হতে শুরু করল। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ তার পক্ষ নিলে আমি অ্যাপল থেকে বহিষ্কৃত হলাম। এবং সেটা ছিল খুব ঢাকঢোল পিটিয়েই। তোমরা বুঝতেই পারছ, ঘটনাটা আমার জন্য কেমন হতাশার ছিল। আমি সারা জীবন যে জিনিসটার পেছনে খেটেছি, সেটাই আর আমার রইল না।
সত্যিই এর পরের কয়েক মাস আমি দিশেহারা অবস্থায় ছিলাম। আমি ডেভিড প্যাকার্ড ও বব নয়েসের সঙ্গে দেখা করে পুরো ব্যাপারটার জন্য ক্ষমা চাইলাম। আমাকে তখন সবাই চিনত, তাই এই চাপ আমি আর নিতে পারছিলাম না। মনে হতো, ভ্যালি ছেড়ে পালিয়ে যাই। কিন্তু সেই সঙ্গে আরেকটা জিনিস আমি বুঝতে পারলাম, আমি যা করছিলাম, সেটাই আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। চাকরিচ্যুতির কারণে কাজের প্রতি আমার ভালোবাসা এক বিন্দুও কমেনি। তাই আমি আবার একেবারে গোড়া থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
প্রথমে মনে না হলেও পরে আবিষ্কার করলাম, অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুতিটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো ঘটনা। আমি অনেকটা নির্ভার হয়ে গেলাম, কোনো চাপ নেই, সফল হওয়ার জন্য বাড়াবাড়ি রকমের কৌশল নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই। আমি প্রবেশ করলাম আমার জীবনের সবচেয়ে সৃজনশীল অংশে।
পরবর্তী পাঁচ বছরে নেক্সট ও পিক্সার নামের দুটো কোম্পানি শুরু করি আমি, আর প্রেমে পড়ি এক অসাধারণ মেয়ের, যাকে পরে বিয়ে করি। পিক্সার থেকে আমরা পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার অ্যানিমেশন ছবি টয় স্টোরি তৈরি করি, আর এখন তো পিক্সারকে সবাই চেনে। পৃথিবীর সবচেয়ে সফল অ্যানিমেশন স্টুডিও। এরপর ঘটে কিছু চমকপ্রদ ঘটনা। অ্যাপল নেক্সটকে কিনে নেয় এবং আমি অ্যাপলে ফিরে আসি। আর লরেনের সঙ্গে চলতে থাকে আমার চমত্কার সংসার জীবন।
আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এগুলোর কিছুই ঘটত না, যদি না অ্যাপল থেকে আমি চাকরিচ্যুত হতাম। এটা ছিল খুব বাজে, তেতো একটা ওষুধ আমার জন্য, কিন্তু দরকারি। কখনো কখনো জীবন তোমাকে ইটপাটকেল মারবে, কিন্তু বিশ্বাস হারিয়ো না। আমি নিশ্চিত, যে জিনিসটা আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেটা হচ্ছে, আমি যে কাজটি করছিলাম, সেটাকে আমি অনেক ভালোবাসতাম। তোমাকে অবশ্যই তোমার ভালোবাসার কাজটি খুঁজে পেতে হবে, ঠিক যেভাবে তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষটিকে খুঁজে বের করো। তোমার জীবনের একটা বিরাট অংশজুড়ে থাকবে তোমার কাজ, তাই জীবন নিয়ে সত্যিকারের সন্তুষ্ট হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে এমন কাজ করা, যে কাজ সম্পর্কে তোমার ধারণা, এটা একটা অসাধারণ কাজ। আর কোনো কাজ তখনই অসাধারণ মনে হবে, যখন তুমি তোমার কাজটিকে ভালোবাসবে। যদি এখনো তোমার ভালোবাসার কাজ খুঁজে না পাও, তাহলে খুঁজতে থাকো। অন্য কোথাও স্থায়ী হয়ে যেয়ো না। তোমার মনই তোমাকে বলে দেবে, যখন তুমি তোমার ভালোবাসার কাজটি খুঁজে পাবে। যেকোনো ভালো সম্পর্কের মতোই, তোমার কাজটি যতই তুমি করতে থাকবে, সময় যাবে, ততই ভালো লাগবে। সুতরাং খুঁজতে থাকো, যতক্ষণ না ভালোবাসার কাজটি পাচ্ছ। অন্য কোনোখানে নিজেকে স্থায়ী করে ফেলো না।
আমার শেষ গল্পটির বিষয় মৃত্যু।
আমার বয়স যখন ১৭ ছিল, তখন আমি একটা উদ্ধৃতি পড়েছিলাম—‘তুুমি যদি প্রতিটি দিনকেই তোমার জীবনের শেষ দিন ভাব, তাহলে একদিন তুমি সত্যি সত্যিই সঠিক হবে।’ এ কথাটা আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল এবং সেই থেকে গত ৩৩ বছর আমি প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করি—আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হতো, তাহলে আমি কি যা যা করতে যাচ্ছি, আজ তা-ই করতাম, নাকি অন্য কিছু করতাম? যখনই এ প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে কয়েক দিন ‘না’ হতো, আমি বুঝতাম, আমার কিছু একটা পরিবর্তন করতে হবে।
পৃথিবী ছেড়ে আমাকে একদিন চলে যেতে হবে, এ জিনিসটা মাথায় রাখার ব্যাপারটাই জীবনে আমাকে বড় বড় সব সিদ্ধান্ত নিতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে। কারণ, প্রায় সবকিছুই যেমন, সব অতি প্রত্যাশা, সব গর্ব, সব লাজলজ্জা আর ব্যর্থতার গ্লানি—মৃত্যুর মুখে হঠাত্ করে সব নেই হয়ে যায়, টিকে থাকে শুধু সেটাই, যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তোমার কিছু হারানোর আছে—আমার জানা মতে, এ চিন্তা দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে, সব সময় মনে রাখা যে একদিন তুমি মরে যাবে। তুমি খোলা বইয়ের মতো উন্মুক্ত হয়েই আছ। তাহলে কেন তুমি সেই পথে যাবে না, যে পথে তোমার মন যেতে বলছে তোমাকে?
প্রায় এক বছর আগের এক সকালে আমার ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তারদের ভাষ্যমতে, এর থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই আমার। প্রায় নিশ্চিতভাবে অনারোগ্য এই ক্যানসারের কারণে তাঁরা আমার আয়ু বেঁধে দিলেন তিন থেকে ছয় মাস। উপদেশ দিলেন বাসায় ফিরে যেতে। যেটার সোজাসাপটা মানে দাঁড়ায়, বাসায় গিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও। এমনভাবে জিনিসটাকে ম্যানেজ করো, যাতে পরিবারের সবার জন্য বিষয়টা যথাসম্ভব কম বেদনাদায়ক হয়।
সারা দিন পর সন্ধ্যায় আমার একটা বায়োপসি হলো। তাঁরা আমার গলার ভেতর দিয়ে একটা এন্ডোস্কোপ নামিয়ে দিয়ে পেটের ভেতর দিয়ে গিয়ে টিউমার থেকে সুঁই দিয়ে কিছু কোষ নিয়ে এলেন। আমাকে অজ্ঞান করে রেখেছিলেন, তাই কিছুই দেখিনি। কিন্তু আমার স্ত্রী পরে আমাকে বলেছিল, চিকিত্সকেরা যখন এন্ডোস্কোপি থেকে পাওয়া কোষগুলো মাইক্রোস্কোপের নিচে রেখে পরীক্ষা করা শুরু করলেন, তখন তাঁরা কাঁদতে শুরু করেছিলেন। কারণ, আমার ক্যানসার এখন যে অবস্থায় আছে, তা সার্জারির মাধ্যমে চিকিত্সা সম্ভব। আমার সেই সার্জারি হয়েছিল এবং দেখতেই পাচ্ছ, এখন আমি সুস্থ। 
কেউই মরতে চায় না। এমনকি যারা স্বর্গে যেতে চায়, তারাও সেখানে যাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি মরতে চায় না। কিন্তু মৃত্যুই আমাদের গন্তব্য। এখনো পর্যন্ত কেউ এটা থেকে বাঁচতে পারেনি। এমনই তো হওয়ার কথা। কারণ, মৃত্যুই সম্ভবত জীবনের অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। এটা জীবনের পরিবর্তনের এজেন্ট। মৃত্যু পুরোনোকে ঝেড়ে ফেলে ‘এসেছে নতুন শিশু’র জন্য জায়গা করে দেয়। এই মুহূর্তে তোমরা হচ্ছ নতুন, কিন্তু খুব বেশি দিন দূরে নয়, যেদিন তোমরা পুরোনো হয়ে যাবে এবং তোমাদের ঝেড়ে ফেলে দেওয়া হবে। আমার অতি নাটুকেপনার জন্য দুঃখিত, কিন্তু এটাই আসল সত্য।
তোমাদের সময় সীমিত। কাজেই কোনো মতবাদের ফাঁদে পড়ে, অর্থাত্ অন্য কারও চিন্তাভাবনার ফাঁদে পড়ে অন্য কারও জীবনযাপন করে নিজের সময় নষ্ট কোরো না। যাদের মতবাদে তুমি নিজের জীবন চালাতে চাচ্ছ, তারা কিন্তু অন্যের মতবাদে চলেনি, নিজের মতবাদেই চলেছে। তোমার নিজের ভেতরের কণ্ঠকে অন্যদের শেকলে শৃঙ্খলিত করো না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, নিজের মন আর ইনটুইশনের মাধ্যমে নিজেকে চালানোর সাহস রাখবে। ওরা যেভাবেই হোক, এরই মধ্যে জেনে ফেলেছে, তুমি আসলে কী হতে চাও। এ ছাড়া আর যা বাকি থাকে, সবই খুব গৌণ ব্যাপার।
আমি যখন তরুণ ছিলাম, তখন দি হোল আর্থ ক্যাটালগ নামের অসাধারণ একটা পত্রিকা প্রকাশিত হতো; যেটা কিনা ছিল আমাদের প্রজন্মের বাইবেল। এটা বের করতেন স্টুয়ার্ড ব্র্যান্ড নামের এক ভদ্রলোক। তিনি তাঁর কবিত্ব দিয়ে পত্রিকাটিকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন।
স্টুয়ার্ট ও তাঁর টিম পত্রিকাটির অনেক সংখ্যা বের করেছিল। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে, আমার বয়স যখন ঠিক তোমাদের বয়সের কাছাকাছি, তখন পত্রিকাটির শেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। বিদায়ী সেই সংখ্যার শেষ পাতায় ছিল একটা ভোরের ছবি। তার নিচে লেখা ছিল—ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো। এটা ছিল তাদের বিদায়কালের বার্তা। ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো। এবং আমি নিজেও সব সময় এটা মেনে চলার চেষ্টা করেছি। আজ তোমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছেড়ে আরও বড়, নতুন একটা জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছ, আমি তোমাদেরও এটা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।
ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো।
তোমাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Friday, 1 December 2017

হাজার রোগ থেকে মুক্তি দিবে ১১টি পাতা


গাছ-গাছালির পাতাকে আমরা অনেকেই অবহেলা করি। কিন্তু এইসব গাছ-গাছালি আমাদের অনেক রকম উপকার করে থাকে। পাতার রয়েছে অনেক গুণ।
জলপাই গাছের পাতা: মাত্র একটি পাতা স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমাবে। জলপাইয়ের পাতার মধ্যে অলিওরোপিয়েন নামক এক ধরনের ফিটোকেমিক্যাল পাওয়া যায়। এর রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। জলপাইয়ের পাতার মধ্যে থাকা অলিওরোপিয়েন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি রক্তনালিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন কমায়। এ ছাড়া করনারি আর্টারিতে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে কাজ করে।জলপাইয়ের পাতা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। জলপাইয়ের পাতা শরীরের স্বাস্থ্যকর টিস্যুগুলোকে সুরক্ষা দেয়,পাতার নির্যাস স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি ক্যানসার তৈরিকারী কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। এ ছাড়া টিউমারের বৃদ্ধিও কমিয়ে দেয়। জলপাইয়ের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি উপাদান। এটি মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়; কেন্দ্রীয় স্নায়ু পদ্ধতিকে স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া এটি প্রবীণ বয়সের পারকিনসন এবং স্মৃতিভ্রম রোগও প্রতিরোধ করে। জলপাইয়ের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকেটিরিয়াল উপাদান। এটি বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি ফ্রি র‍্যাডিকেল প্রতিরোধ করে। জলপাইয়ের পাতা প্রদাহ থেকে রেহাই দেয়। অলিওরোপিয়েন হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া প্রতিরোধ করে। হাড় ক্ষয় রোগের সঙ্গে লড়াই করে। এ ছাড়া এই পাতা হাড় তৈরিকারী কোষকে তৈরি হতে উদ্দীপ্ত করে। একে মোটামুটি নিরাপদ খাবারই বলা যায়। জলপাইয়ের পাতার নির্যাস তরল আকারে বা শুকিয়ে গুঁড়ো করে খেতে পারেন। জলপাইয়ের পাতার চা বানিয়েও খেতে পারেন।
পাথরকুচি পাতা: পাথরকুচি পাতাকে জন্ডিসের যম বলা হয়। পাথরকুচি পাতা কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুই বার ২ থেকে ৩টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খান। লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করতে বা জন্ডিস নিরাময়ে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী। অনেক দিন ধরে যারা সর্দির সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য পাথরকুচি পাতা অমৃতস্বরূপ। পাথরকুচি পাতার রস একটু গরম করে খেলে সর্দির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।পাথরকুচি পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করলে ক্ষত তাড়াতাড়ি সেরে যায়। পাথরকুচি পাতা বেটেও কাটাস্থানে লাগাতে পারেন। এছাড়াও-উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্রথলির সমস্যা থেকে পাথরকুচি পাতা মুক্তি দেয়। শরীরের জ্বালা-পোড়া বা আর্থ্রাইটিস থেকে রক্ষা করে। পাথরকুচি পাতা বেটে কয়েক ফোঁটা রস কানের ভেতর দিলে কানের যন্ত্রণা কমে যায়। কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশয় রোগ সারাতে পাথরকুচি পাতার জুড়ি নেই। ৩ মি.লি. পাথরকুচি পাতার জুসের সাথে ৩ গ্রাম জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন পর্যন্ত খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়। পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস্‌ ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাথে সাথেই এর মধ্যে জ্বালা-পোড়া কমানোর ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্বন্ধে অনেক সচেতন তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে পারেন। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি জাতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
পাটের পাতা : পাটের পাতা থেকে চা বানানো যায়। ফুল আসার আগেই পাট গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করতে হবে। পরে সে পাতা সূর্যের আলোতে শুকোতে সাইজ মতো গুঁড়ো করে নিতে হবে। এরপর মধু বা চিনি দিয়ে এ চা পান করা যাবে। আবার এগুলো ছাড়াও পান করা যাবে।পাট শাকের সব ভেষজ গুনাগুণও পাট পাতা থেকে তৈরি হওয়া চায়েও থাকবে। তোষা পাটের পাতা থেকে তৈরি করা চা সুস্বাদু হবে কিন্তু দুধ মিশিয়ে এ চা খাওয়া যাবে না।
আকন্দ পাতা: হাঁপানি রোগের মহৌষধ আকন্দ পাতা।গ্রাম-বাংলার মানুষ হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আকন্দ পাতা ব্যবহার করে। আয়ুর্বেদার্য শিবকালি ভট্ট্রাচার্যের মতে, ১৪টি আকন্দ ফুলের মাঝখানে চৌকো অংশটি নিতে হবে। তারসঙ্গে ২১টি গুল মরিচ দিয়ে একসঙ্গে বেটে ২১টি বড়ি বানাতে হবে। প্রতিদিন সকালে পানি দিয়ে ১টি বড়ি খেলে হাঁপানি রোগের উপশম হয়। এই ওষুধ খাওয়ার সময় পথ্য হিসেবে শুধু দুধ ভাত খেতে হয়। এতে শ্বাসকষ্ট কেটে যায়। আকন্দ গাছের মূলের ছাল শুখিয়ে চূর্ণ করে আকন্দের আঠা দিয়ে মুড়িয়ে বিড়ির মতো করে বানিয়ে সেটি ধরিয়ে ধোয়া টানলে হাঁপানি লাঘব হয়। হাঁপানি ছাড়াও আকন্দ পাতার অন্যান্য গুণাবলি- হাঁপানি ছাড়াও আকন্দ পাতা ওষুধ হিসেবে ব্রণ ফাটাতে সাহায্য করে। আকন্দ পাতা দিয়ে ব্রণ চেপে বেঁধে রাখলে ব্রণ ফেটে যায়। বিছে কামড়ালে জ্বালা-পোড়া কমাতে আকন্দ পাতা ব্যবহার করা হযে থাকে। শরীরের কোনো স্থানে দুষিত ক্ষত হলে সেই স্থানটিতে আকন্দ পাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হয়। এতে পুঁজ হয় না। বুকে সর্দি বসে গেলে ভালো করে পুরনো ঘি বুকে ডলতে হয়। ঘি মাখানো বুকে আকন্দের পাতা গরম করে ছেক দিলে সর্দি ভালো হয়। খোস-পাচড়া বা একজিমার ক্ষেত্রে আকন্দের আঠার সঙ্গে চার গুণ সরিষার তেল মিশিয়ে গরম করতে হয়। এই গরম তেলের সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খোস পাচড়ায় মাখলে তা ভালো হয়ে যায়। পা মোচকে গেলে প্রচণ্ড ব্যথায় এই আকন্দ পাতা দিয়ে গরম ছেক দিলে ব্যথা উপশম হয়।
ডায়াবেটিস গাছের পাতা: ডায়াবেটিস রোগের মহৌষধ ডায়াবেটিস গাছ ও গাছের পাতা।ডায়াবেটিস গাছের পাতা সেবন করলে, কিডনি, লিভার, প্রেসারও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে৷সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন এন্টি ডায়াবেটিস গাছটির পাতা এবং পাতার রস সেবনে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে ৷ এছাড়া সুগার এবং কলস্টোরাল নিয়ন্ত্রণ’ই করে না, তরতাজা রাখে কিডনি, লিভার, ব্লাডপ্রেসার ৷ ডাক্তার যাদের চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কোন খাদ্য গ্রহণ করতে নিষেধ করে, তারাও এই এন্টি ডায়াবেটিস গাছের পাতা নিয়মিত সেবনে সবকিছুই খেতে পারবে ৷ শুধু প্রতিদিন সকালবেলা আর বিকেলবেলা দুটি করে পাতা দাঁতে চিবিয়ে পানি সহ সেবন করলেই হল৷ ডায়াবেটিস রুগীর জন্য চিনির বদলে বিকল্প চিনির ট্যাবলেটস যা ডায়াবেটিস রোগীরা চা’এর সাথে মিশিয়ে সেবন করে থাকে৷ ডায়াবেটিস গাছের পাতা সেবনের পর এই বিকল্প চিনি আর ব্যবহার করতে হয় না ৷
নিম পাতা: বিনা পয়সায় এলার্জিকে গুডবাই জানাতে পারেন আজীবনের জন্য। এজন্য আপনাকে যা করতে হবে– এক কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুড়ো করুন এবং তা ভালো করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এবার ইসব গুলের ভুষি কিনুন। এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চা চামচ ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে। কার্যকারিতা শুরু হতে এক মাস লেগে যেতে পারে। আরোগ্য লাভ করবেন। এরপর থেকে এলার্জির জন্য যা যা খেতে পারতেন না যেমন- হাঁসের ডিম, বেগুন, গরুর মাংস, চিংড়ি, কচু, কচুশাক, গাভীর দুধ, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য খাবার খান। দেখবেন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
মেহেদি পাতা : মেহেদি পাতায় রয়েছে এন্টিফাঙ্গাল, এন্টি-ইনফ্লেমেটরী, কুলিং ও হিলিং, এন্টিইরিটেন্ট ও সিডেটিভ গুণাগুণ। মেহেদি পাতা ও ফুল হতে আহরিত তেল অনেক চর্ম -মলম তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চামড়ায় ক্ষত, পোড়া ও চামড়ার ফ্যাকাসে হলুদ দাগ চিকিৎসায় অত্যান্ত কার্যকরী ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয়। স্কেবিস, চর্মের চুলকানি জাতীয় ও নখের ফাটার চিকিৎসায় পেস্ট ব্যবহার হয়। দেহ হতে পানি হ্রাস প্রতিরোধ করে; আবার ময়েশ্চার ধারণের ফলে কোন অঙ্গ স্ফিতীর রোধে এক প্রকার ডিসল্‌ভিং ফ্যাক্টর গঠনে কাজে লাগে। মাথাব্যাথা, জ্বর ও ভিটামিন-বি এর ঘাটতি জনিত পায়ের পাতার জ্বালা-পোড়ার ক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা কমিয়ে স্বস্তি প্রদান করতে পারে। মাথার টাকের চিকিৎসার সহায়ক। এই পাতা দিয়ে গরম করা সরিষার তেল চুলের স্বাস্থ্যবান বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এক্ষেত্রে ২৫০ গ্রাম সরিষার তেল একটি পাত্রে সিদ্ধ করার সময় ৬০ গ্রাম হেনা পাতা ক্রমান্বয়ে যোগ করা হয়; তারপর একটি কাপড় দিয়ে ছেঁকে বোতলে সংরক্ষণ করা হয়। আমাশয়ের চিকিৎসায় এর বীজের পাওডারের সাথে ঘি মিশিয়ে সেবন করা যায়। লিভারের বিভিন্ন জটিলতা যেমন- লিভারের বৃদ্ধি ও জন্ডিসের চিকিৎসায় এর বাকল ব্যবহার করা যায়। এর ফুলের পেস্টের সাথে ভিনেগার মিশিয়ে কপালে প্রয়োগ করলে রৌদ্রজনিত কারণে মাথা ব্যাথার উপশম হয়। গলা ব্যাথা উপশমে হেনা পাতা দিয়ে গরম করা পানি দিয়ে কুলকুচা করা যায় বা আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা যায়। অস্থির জোড়ায় প্রদাহ, ফোলা ও থেতলে যাওয়া অঙ্গে পাতার পেস্ট স্থানীয়ভাবে প্রয়োগ করা যায়।
আম পাতা: বেশ কিছু রোগকে দূরে রাখতে আম পাতার কোনও বিকল্প নেই। এই প্রকৃতিক উপাদানটির মধ্যে থাকা ভিটামিন সি, বি, এ এবং আরও সব উপকারি উপাদান মানব শরীরকে ভেতর থেকে এতটাই শক্তিশালী করে তালে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই তো এই শীতে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে আমের সন্ধান না পেলেও আম পাতাকে কাজে লাগাতেই পারেন! আম পাতার ভেতর আরেকটি উপকারি উপাদান থাকে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অ্যান্টিঅ্যাক্সিডেন্ট নামে পরিচিত। এই উপাদানটি ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আর অপেক্ষা না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন আম পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে কী কী উপকার মেলে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আম পাতার ভূমিকা অন্যতম। এর মধ্যে থাকা টেনিনস নামক এক ধরনের উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার সুযোগই পায় না। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো আম পাতা নিয়ে সেগুলিকে শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পাউডার যে কোনও কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে গ্রহণ করলেই অসাধারণ উপকার। এছাড়া এক গ্লাস পানিতে পরিমাণ মতো আম পাতা চুবিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরেরদিন সকালে পানিটা ছেকে নিয়ে পান করুন। এমনটা যদি কয়েকদিন করতে পারেন, তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ে যে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না। আম পাতার মধ্যে থাকা হাইপোটেনসিভ প্রপাটিজ শরীরে প্রবেশ করার পর ব্লাড ভেসেলের কর্মক্ষমতাকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তচাপও স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাই যাদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস রয়েছে, তারা আম পাতাকে কাজে লাগিয়ে এই রোগকে দূর রাখতেই পারেন। নিয়মিত গোসলের পানিতে কয়েকটি আম পাতা ফেলে গোসল করলে মানসিক চাপ তো কমেই, সেই সঙ্গে শরীর এবং মন এতটা তরতাজা হয়ে ওঠে যে অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। কিডনির পাথর চিকিৎসায় আম পাতাবিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, নিয়মিত এক গ্লাস পানিতে আম পাতার গুঁড়ো ফেলে সারা রাত রেখে পরদিন সকালে সেই পানীয় খেলে স্টোনের প্রকোপ কমে দ্রুতই। তাই আপনিও যদি এমন কোনও রোগে ভুগতে থাকেন, তাহলে নিশ্চিন্তে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত এক গ্লাস পানিতে পরিমাণ মতো আম পাতা এবং মধু মিশিয়ে সেই পানি ফুটিয়ে যদি খেতে পারেন, তাহলে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা এবং সর্দি-কাশির মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময়ের ব্যপার মাত্র। শীতকালে ঠান্ডা লেগে কানে যন্ত্রণা হওয়ার ঘটনা প্রায়ই হয়ে থাকে। তাই তাপমাত্রা কমার আগে প্রয়োজন মতো আম পাতা সংগ্রহ করে নিন। আসলে এক চামচ আম পাতার রস, একটু গরম করে যদি কানে দেওয়া যায়, তাহলে এই ধরনের সমস্যা কমতে একেবারে সময়ই লাগে না। পরিমাণ মতো আম পাতা নিয়ে এক গ্লাস গরম পানি ফেলে দিন। তারপর সেই জলটি সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে খালি পেটে এই মিশ্রনটি পান করলে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বেরিয়ে গিয়ে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে ঘটতে সময় লাগে না।
পেয়ারা পাতা: চুল পড়া রোধ করতে অনেকে জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করেন। চুল পড়া রোধে দামি দামি ওষুধ ও প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু কিছুতেও কিছু হয় না। তবে পেয়ারা পাতার ব্যবহারে আপনি পেতে পারেন জাদুকরী সমাধান। কারণ পেয়ারা পাতায় অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে যা মাথার তালু সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এমনকি এটি মাথার খুশকি হওয়া রোধ করে। ভিটামিন সি মাথার তালুতে ফলিক অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রেখে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এই ফর্মুলা তৈরিতে যা যা প্রয়োজন- এক মুঠো পেয়ারা পাতা, ১ লিটার পানি। যেভাবে তৈরি করবেন- একটি পাত্রে পানি জ্বাল দিতে দিন। পানি ফুটে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ফুটে এলে এতে পেয়ারা পাতা দিয়ে দিন। পেয়ারা পাতা দিয়ে ২০ মিনিট জ্বাল দিন। ২০ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন। যেভাবে ব্যবহার করবেন- প্রথমে চুল ভাল করে শ্যাম্পু করে নিন; তবে কন্ডিশনার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। চুল কিছুটা শুকিয়ে এলে চুল বেণী করে তারপর পেয়ারা পাতার পানি ঢালুন। পানিটি মাথার তালুতে কমপক্ষে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন এবং ২ ঘণ্টা রেখে তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়া বন্ধ করবে যদি চুল পড়া সমস্যা অনেক বেশি থাকে তবে সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করুন এটি চুল পড়া বন্ধ করবে। আর যদি চুল শাইনি সিল্কি করে তুলতে চান তবে সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করুন।
পেঁপে পাতা: পেঁপে পাতা শুধু ডেঙ্গু ভাইরাসকে মারতেই নয়, একাধিক রোগকে দূরে রাখতেও এর কোনো বিকল্প নেই। হজম ক্ষমতার উন্নতির পাশাপাশি শরীরকে সব দিক থেকে বাঁচাতে বাস্তবিকই পেঁপে পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত পেঁপে  পাঁতার রস খেলে শরীরে প্লাটিলেট কাউন্ট কমে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাও খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আর একবার শরীরের  ইউমিনি সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে উঠলে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই একেবারে থাকে না বললেই চলে। পেঁপে পাতার ভেতরে থাকা মজুত অ্যাসেটোজেনিন নামক অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল প্রপাটিজ শরীরে প্রবেশ করার পর ভেতর থেকে শরীরকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ম্যালেরিয়া মতো রোগ কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই মশার উপদ্রপ থেকে বাঁচতে পেঁপে পাতার রস খেতে হবে। বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে পেঁপে পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান লিভারের ভেতরে থাকা টক্সিক  উপাদানদের শরীরে থেকে বের করে দেয়। সেই সঙ্গে লিভারের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। পেঁপে পাতায় থাকা প্রোটিস এবং অ্যামিলেস নামক দুটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে হজম ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাকস্থলি এবং কোলনের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। রক্তে বাড়তে থাকা সুগারের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই নিয়মিত পেঁপে পাতা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা বেশ কিছু উপকারি উপাদান ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহে শর্করার মাত্রা বাড়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। নারীরা পিরিয়ডের কয়েকটা দিনে নিয়ম করে পেঁপে পাতার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখেন ক্র্যাম্প এবং যন্ত্রণা দুইই কমবে। আসলে পেঁপে পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ একদিকে যেমন দেহের ভেতরে প্রদাহ কমিয়ে যন্ত্রণার প্রকোপ কমায়, তেমনি অন্যদিকে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দূর করে অন্যান্য নানাবিধ সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল এমন একটি উপাদান, যা শরীরে থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমায়। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে পেঁপে পাতায়। তাই নিয়মিত যদি এর রস খেতে পারেন, তাহলে ক্যান্সার রোগকে কোনো দুশ্চিন্তাই থাকে না।

সুস্থ থাকতে রাতে ঘুমের আগে কি করবেন?


রাতে ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে ডিনার করলে হজম ও ঘুম ভালো হয়। ঘুমানোর আগে ৬টি পানীয় পান করলে তা’ ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই ৬টি পানীয় হচ্ছে দুধ, সয় মিল্ক, আঙুরের রস, ক্যামোমাইল টি, গ্রেপফ্রুট জুস, সয় প্রোটিন শেক ইত্যাদি।
ঘুমের আগে দুধ খেলে দুধের মধ্যে থাকা ট্রিপটোফ্যান ও ক্যালসিয়াম ঘুম আনতে সাহায্য করে। ভালো ঘুম শরীরে স্ট্রেসের মাত্রা কমিয়ে ক্যালোরি কমাতে সাহায্য করে। লো ক্যালোরি সয় মিল্কের মধ্যে থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড। যা ঘুম আনতে সাহায্য করে। ঘুমের আগে সয় মিল্ক খেলে তা শরীরে ভালো হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। যা অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে সাহায্য করে।
ঘুমানোর আগে টাটকা আঙুরের রস যেমন ঘুম আনতে সাহায্য করে তেমনই ওজন কমাতেও সাহায্য করে। ঘুমনোর আগে ক্যামোমাইল টি খেলে শরীরে গ্লাইসিনের মাত্রা বাড়িয়ে ঘুম আনতে সাহায্য করে। ক্যামোমাইল চা নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে স্নায়ুতন্ত্রকে রিল্যাক্সড রাখে। পাশাপাশি গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ঘুমনোর আগে গ্রেপফ্রুট জুস শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ক্যালোরি কম থাকার সঙ্গে ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম থাকে এই ফলে। যা ত্বকের জন্যও ভালো। সয় প্রোটিন শেক ভালো ঘুমে সাহায্য করে। এই শেক ড্রাউজ ইনডিউসিং মেলাটোনিন ক্ষরণে সাহায্য করে যা কর্টিসলের মাত্রা কমিয়ে পেটের চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।

ফুটবল বিশ্বকাপের সময় সূচি - ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের সময় সূচি


২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের সময়সূচি:
গ্রুপ পর্ব:
তারিখ ও বার
সময়
গ্রুপ
ম্যাচ
স্থান
১৪ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ৯টা
রাশিয়া-সৌদি আরব
মস্কো
১৫ জুন, শুক্রবার
সন্ধ্যা ৬টা
মিশর-উরুগুয়ে
একাতেরিনবুর্গ
১৫ জুন, শুক্রবার
রাত ৯টা
বি
মরক্কো-ইরান
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
১৫ জুন, শুক্রবার
সন্ধ্যা ১২টা
বি
পর্তুগাল-স্পেন
সোচি
১৬ জুন, শনিবার
বিকাল ৪টা
সি
ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া
কাজান
১৬ জুন, শনিবার
সন্ধ্যা ৭টা
ডি
আর্জেন্টিনা-আইসল্যান্ড
মস্কো
১৬ জুন, শনিবার
রাত ১০টা
সি
পেরু-ডেনমার্ক
সারানস্ক
১৬ জুন, শনিবার
রাত ১টা
ডি
ক্রোয়েশিয়া-নাইজেরিয়া
কালিনিনগ্রাদ
১৭ জুন, রোববার
সন্ধ্যা ৬টা
কোস্টা রিকা-সার্বিয়া
সামারা
১৭ জুন, রোববার
রাত ৯টা
এফ
জার্মানি-মেক্সিকো
মস্কো
১৭ জুন, রোববার
রাত ১২টা
ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড
রস্তোভ
১৮ জুন, সোমবার
সন্ধ্যা ৬টা
এফ
সুইডেন-দক্ষিণ কোরিয়া
নিজনি নভগোরোদ
১৮ জুন, সোমবার
রাত ৯টা
জি
বেলজিয়াম-পানামা
সোচি
১৮ জুন, সোমবার
রাত ১২টা
জি
তিউনিশিয়া-ইংল্যান্ড
ভলগোগ্রাদ
১৯ জুন, মঙ্গলবার
সন্ধ্যা ৬টা
এইচ
পোল্যান্ড-সেনেগাল
মস্কো
১৯ জুন, মঙ্গলবার
রাত ৯টা
এইচ
কলম্বিয়া-জাপান
সারানস্ক
১৯ জুন, মঙ্গলবার
রাত ১২টা
রাশিয়া-মিশর
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
২০ জুন, বুধবার
সন্ধ্যা ৬টা
বি
পর্তুগাল-মরক্কো
মস্কো
২০ জুন, বুধবার
রাত ৯টা
উরুগুয়ে-সৌদি আরব
রস্তোভ
২০ জুন, বুধবার
রাত ১২টা
বি
ইরান-স্পেন
কাজান
২১ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ৯টা
সি
ফ্রান্স-পেরু
একাতেরিনবুর্গ
২১ জুন, বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যা ৬টা
সি
ডেনমার্ক-অস্ট্রেলিয়া
সামারা
২১ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ১২টা
ডি
আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া
নিজনি নভগোরোদ
২২ জুন, শুক্রবার
সন্ধ্যা ৬টা
ব্রাজিল-কোস্টারিকা
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
২২ জুন, শুক্রবার
রাত ৯টা
ডি
নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ড
ভলগোগ্রাদ
২২ জুন, শুক্রবার
রাত ১২টা
সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড
কালিনিনগ্রাদ
২৩ জুন, শনিবার
সন্ধ্যা ৬টা
জি
বেলজিয়াম-তিউনিশিয়া
মস্কো
২৩ জুন, শনিবার
রাত ৯টা
এফ
জার্মানি-সুইডেন
সোচি
২৩ জুন, শনিবার
রাত ১২টা
এফ
দক্ষিণ কোরিয়া-মেক্সিকো
রস্তোভ
২৪ জুন, রোববার
সন্ধ্যা ৬টা
জি
ইংল্যান্ড-পানামা
নিজনি নভগোরোদ
২৪ জুন, রোববার
রাত ৯টা
এইচ
জাপান-সেনেগাল
একাতেরিনবুর্গ
২৪ জুন, রোববার
রাত ১২টা
এইচ
পোল্যান্ড-কলম্বিয়া
কাজান
২৫ জুন, সোমবার
রাত ৮টা
উরুগুয়ে-রাশিয়া
সামারা
২৫ জুন, সোমবার
রাত ৮টা
সৌদি আরব-মিশর
ভলগোগ্রাদ
২৫ জুন, সোমবার
রাত ১২টা
বি
ইরান-পর্তুগাল
সারানস্ক
২৫ জুন, সোমবার
রাত ১২টা
বি
স্পেন-মরক্কো
কালিনিনগ্রাদ
২৬ জুন, মঙ্গলবার
রাত ৮টা
সি
ডেনমার্ক-ফ্রান্স
মস্কো
২৬ জুন, মঙ্গলবার
রাত ৮টা
সি
অস্ট্রেলিয়া-পেরু
সোচি
২৬ জুন, মঙ্গলবার
রাত ১২টা
ডি
নাইজেরিয়া-আর্জেন্টিনা
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
২৬ জুন, মঙ্গলবার
রাত ১২টা
ডি
আইসল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া
রস্তোভ
২৭ জুন, বুধবার
রাত ৮টা
এফ
দক্ষিণ কোরিয়া-জার্মানি
কাজান
২৭ জুন, বুধবার
রাত ৮টা
এফ
মেক্সিকো-সুইডেন
একাতেরিনবুর্গ
২৭ জুন, বুধবার
রাত ১২টা
সার্বিয়া-ব্রাজিল
মস্কো
২৭ জুন, বুধবার
রাত ১২টা
সুইজারল্যান্ড-কোস্টা রিকা
নিজনি নভগোরোদ
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ৮টা
এইচ
জাপান-পোল্যান্ড
ভলগোগ্রাদ
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ৮টা
এইচ
সেনেগাল-কলম্বিয়া
সামারা
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ১২টা
জি
ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম
কালিনিনগ্রাদ
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার
রাত ১২টা
জি
পানামা-তিউনিশিয়া
সারানস্ক

শেষ ষোলো:
৩০ জুন, শনিবার
রাত ৮টা
সি ১-ডি ২ (ম্যাচ-৫০)
কাজান
৩০ জুন, শনিবার
রাত ১২টা
এ ১-বি ২ (ম্যাচ ৪৯)
সোচি
১ জুলাই, রোববার
রাত ৮টা
বি ১-এ ২ (ম্যাচ ৫১)
মস্কো
১ জুলাই, রোববার
রাত ১২টা
ডি ১-সি ২ (ম্যাচ ৫২)
নিজনি নভগোরোদ
২ জুলাই, সোমবার
রাত ৮টা
ই ১-এফ ২ (ম্যাচ ৫৩)
সামারা
২ জুলাই, সোমবার
রাত ১২টা
জি ১-এইচ ২ (ম্যাচ ৫৪)
রস্তোভ
৩ জুলাই, মঙ্গলবার
রাত ৮টা
এফ ১-ই ২ (ম্যাচ ৫৫)
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
৩ জুলাই, মঙ্গলবার
রাত ১২টা
এইচ ১-জি ২ (ম্যাচ ৫৬)
মস্কো

কোয়ার্টার-ফাইনাল:
৬ জুলাই, শুক্রবার
রাত ৮টা
ম্যাচ ৪৯ বিজয়ী-ম্যাচ ৫০ বিজয়ী (ম্যাচ-৫৭)
নিজনি নভগোরোদ
৬ জুলাই, শুক্রবার
রাত ১২টা
ম্যাচ ৫৩ বিজয়ী-ম্যাচ ৫৪ বিজয়ী (ম্যাচ-৫৮)
কাজান
৭ জুলাই, শনিবার
রাত ৮টা
ম্যাচ ৫৫ বিজয়ী-ম্যাচ ৫৬ বিজয়ী (ম্যাচ-৬০)
সামারা
৭ জুলাই, শনিবার
রাত ১২টা
ম্যাচ ৫১ বিজয়ী-ম্যাচ ৫২ বিজয়ী (ম্যাচ-৫৯)
সোচি

সেমি-ফাইনাল:
১০ জুলাই, মঙ্গলবার
রাত ১২টা
ম্যাচ ৫৭ বিজয়ী-ম্যাচ ৫৮ বিজয়ী (ম্যাচ-৬১)
সেন্ত পিতার্সবুর্গ
১১ জুলাই, বুধবার
রাত ১২টা
ম্যাচ ৫৯ বিজয়ী-ম্যাচ ৬০ বিজয়ী (ম্যাচ-৬২)
মস্কো

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ:
১৪ জুলাই, শনিবার রাত ৮টা সেন্ত পিতার্সবুর্গ
ফাইনাল
১৫ জুলাই, রোববার রাত ৯টা মস্কো
# সূচি বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী